যারা ইতিহাস ভুলে যায়, তারা ইতিহাসে হয়ে যাওয়া ভুল গুলর পুনরাবৃত্তি ঘটায়। আমরা ইতিহাসে হয়ে যাওয়া ভুল গুল থেকে কখনই শিক্ষা নেই না, যার ফলে তার খারাপ প্রভাব আমাদের উপর এসে পরে। আজকের এই প্রতিবেদনে ইতিহাসের সব থেকে খারাপ ৭টি ঘটানর কথা জানাব, যা পুরো মানব জাতির ধ্বংসের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
১। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ গুলর মধ্যে একটি। চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে প্রায় ৭ কোটি সৈনিক অংশগ্রহন করেছিল। এই বিশ্বজুদ্ধে প্রায় ১কোটি ৬০ লক্ষ মানুশ প্রান হারান। অনেক নতুন নতুন অস্ত্র এই যুদ্ধে প্রথমবার ব্যাবহার করা হয়েছিল। যার ফলে সারা বিশ্ব জুরে যুদ্ধের ছবি পাল্টে যায়, যা পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
২। ১৯১৮ সালের বিশ্বমহামারি

১৯১৮ সালের বিশ্বমহামারি ইনফ্লুয়েঞ্জা, যা স্প্যানিশ ফ্লু নামেও পরিচিত। এটি ইতিহাসের সবথেকে ভয়ানক মহামারির ভিতর একটি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব কিছুটা কমতে না কমতেই এই রোগের আক্রমন শুরু হয়। এই মহামারি যখন চরম পর্যায়ে ছিল তখন প্রায় ৫০ কোটি মানুশ এতে আক্রান্ত হয়। যা সেসময়ে পুরো পৃথিবীর ৩ ভাগের এক ভাগ জনসংখ্যা ছিল। আর মৃত্যুর হিসাবে দেখা হলে, আনুমানিক ২ থেকে ৫ কোটি মানুষ এতে প্রান হারায়। কিছু কিছু হিসাবে এই মৃত্যুর সংখ্যা ১০ কোটি বলা হয়। কারন তখনও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল, এবং সৈনিকরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাত্রা করছিল, এই কারনেই এই মহামারি খুব সহজেই সারা পৃথিবীতে ছরিয়ে পরে। বলা হয় এই রোগে বয়স্ক মানুষদের থেকে যুবক ও স্বাস্থ্যবান ব্যাক্তিদের বেশি আক্রমন করেছিল।
৩। ১৯৪৭ এর ভারত ভাগ

১৯৪৭ এর দেশ ভাগ, একটি মানুষের জিবনে সব থেকে খারাপ সময় তখনই আসে যখন তাকে নিজের ঘর, নিজের জন্মভুমি, এবং এলাকা ছেরে চলে যেতে হয়। পৃথিবীতে এর আগে এত বর মাইগ্রেশন কখন দেখেনি, যেখানে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ তাদের নিজদের বাড়ি ঘর ছেরেছিল। কত বাচ্চা অনাথ হয়েছে, কত নারি তাদের সম্মান হারিয়েছে তার হিসাব নেই ইতিহাসে, আনুমানিক হিসাবে বলা হয় প্রায় ৫ থেকে ২০ লক্ষ মানুষ দেশ ভাগের সময় প্রান হারিয়েছিল, হতে পারে এই সংখ্যা আরও বেশি, দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে ভারতে একটি জাত্রি বঝাই ট্রেন এসেছিল, জাতে সমস্ত যাত্রী মৃত ছিল।
৪। মঙ্গোলদের বিজয় অভিযান

মঙ্গলদের বিজয় অভিযান, ১৩০০ শতকের শুরু দিকে মঙ্গল সাম্রাজ্যের সুচনা হয়, তারা পৃথিবীর এক বিরাট অংশ জিতে নিয়েছিল। তবে তারা এই জয় পেয়েছিল বহু মানুষের জিবনের বদলে, মঙ্গোল সাম্রাজ্যের সুচনা করেছিলেন চেঙ্গিস খান, জিনি প্রায় ৪ কোটি মানুষের হত্যা করেছিলেন। বহু শহর এবং গ্রাম তিনি রাতারাতি আগুনে পুরিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন। ইতিহাসবিদদের মতে চেঙ্গিস খানের শাসনকাল ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ের মধ্যে একটি।
৫। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

সে সময়ে কেই বা ভেবেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র ২০ বছরের মধ্যেই আরও একটি বিধ্বংসী যুদ্ধ হবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হওয়া সন্ধিই তিক্ততা বারিয়েছিল পরাজিত পক্ষের মধ্যে, ফলে এওত তারাতারি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উথেছিল। ৬ বছর ধরে এই যুদ্ধ আজ পর্যন্ত মানব ইতিহাসের সব থেকে বিধ্বংসি যুদ্ধ হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে। এই বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি মানুষ প্রান হারান, এই যুদ্ধেই সর্বপ্রথম পারমানবিক বোমা ব্যাবহার করা হয়েছিল, এবং এই যুদ্ধ চলাকালীনই হিটলার ইহুদিদের উপর অত্যাচার করার জন্য কন্সেন্ট্রাশ্ন ক্যাম্প তৈরি করেছিল।
৬। বিউবনিক প্লেগ

বিউবনিক প্লেগ, তবে এই মহামারি ইতিহাসে ব্ল্যাক ডেথ নামে বেশি পরিচিত। এটি মানব ইতিহাসের সব থেকে বিনাশকারী মহামারি ছিল, একটি অনুমানিক হিসাবে বলা হয়, ৮ থেকে ২০ কোটি মানুষ এই মহামারিতে মারা গিয়েছিল, এই মৃত্যুর সংখ্যা এতটাই বেশি যে, সে সময়ে ইউরপের প্রায় ৬০ শতাংশ জনসংখ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এই মহামারিতে। এই রোগ নিয়ে ইউরোপে অনেক ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত হয়েছিল, রোগের কারন জানতে না পেরে মানুষ ভাবে এই রোগের কোন ঔষধ নেই, এই রোগ ঈশ্বরের রোষে হচ্ছে। এই অন্ধবিশ্বাসের ফলে মহামারি আরও বড় আকার ধারন করে।
৭। ৫৩৬ খিস্টাব্দ

ইতিহাসবিদদের মতে ৫৩৬ খিস্টাব্দ ইতিহাসের সব থেকে খারাপ সময় ছিল মানব জাতির জন্য, এই বছর পৃথিবীর অনেক দেশ অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, এই সময়ে এক রহস্যময় ধোঁয়াশা ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় ছরিয়ে পরে, ফলে প্রায় ১৮ মাস অন্ধকারে ডুবে ছিল এই দেশ গুল, সূর্যের আল মাটি পর্যন্ত পউছাচ্ছিল না, তাপমাত্রা মাইনাস আরাই ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়, মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যায়, অসংখ্য মানুষ অনাহারে প্রান হারায়, ইতিহাসবিদরা সেই সময়টিকে ডার্ক এজ নাম দিয়েছেন
ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই এমন অজস্র খারাপ সময় আমাদের সামনে ভেসে উঠবে, আজও বহু দেশে গৃহযুদ্ধ, অনাহারে প্রান হারাচ্ছে, কিন্তু আমাদের এই সব ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত জাতে ভবিষ্যতে আমরা এমন ঘটনার মুখমুখি না হই। প্রতিবেদনটি ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
প্রতিবেদনটি ভিডিও দেখুন –